যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। যুক্তরাজ্যে সনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ধরনটির কারণে ওই দেশ থেকে ফিরলে করোনা নেগেটিভ সনদ লাগবে। নেগেটিভ সনদ না থাকলে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক সাত দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। আজ বুধবার ঢাকার আশকোনার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি যাতে বাংলাদেশে ছড়াতে না পারে, সেজন্য সতর্কতা হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনটি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, যারা ইউকে (যুক্তরাজ্য) থেকে আসবে, তাদের (সনদ না থাকলে) সাত দিন কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে।’
গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির সন্ধান মেলে। ভাইরাসের নতুন বৈশিষ্ট্যটি ৭০ শতাংশ বেশি ও দ্রুতগতিতে ছড়াতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ভাইরাসটি লন্ডনসহ ইংল্যান্ডের বেশ কিছু এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসের ওই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসেও পৌঁছে গেছে। ইউরোপের ৪০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করেছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘সাত দিন কোয়ারেন্টিন শেষে যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। পরে তারা বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন করবেন।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে যারা আসবেন তারা আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনীয় কাজ সারবেন। আমরা চাই না নতুন ধরনের করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ এখন পরিস্থিতি ‘পর্যবেক্ষণ’ করছে। আমরা বসে নেই। ফ্লাইট বাতিল করা হবে কিনা তা আলোচনায় আছে। আমরা অতি তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।’
আশকোনা কোয়ারেন্টিন সেন্টারে জিন এক্সপার্ট ল্যাব এবং ভ্রাম্যমাণ আরটি-পিসিআর ল্যাবের উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই ল্যাব পরিচালনা করবে ডিএমএফআর মলিকিউলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিকস।
ল্যাবটি প্রয়োজনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাবে এবং মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করবে। নমুনা দেওয়া ব্যক্তি পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে জানতে পারবেন। জরুরি প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পাঞ্চলে গিয়েও নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করবে এই ভ্রাম্যমাণ ল্যাব।
আর বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোভিড-১৯ আছে কি না তা জানতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হবে আশকোনা হজ ক্যাম্পে নতুন চালু হওয়া জিন এক্সপার্ট ল্যাবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা, আশকোনা কোয়ারেন্টিন সেন্টারের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুর রহমান, ডিএমএফআর মলিকিউলার ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফাইজুর রহমান।