শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন

প্লট বিক্রির নামে ডিজিটাল প্রতারণা করে কয়েক হাজার কোটি টাকার মিশনে ওয়েলকেয়ার গ্রুপের এমডি মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু

প্লট বিক্রির নামে ডিজিটাল প্রতারণা করে কয়েক হাজার কোটি টাকার মিশনে ওয়েলকেয়ার গ্রুপের এমডি মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু

বিশেষ প্রতিনিধি:
ওয়েলকেয়ার গ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন নামে আবাসন প্রকল্পের কোন রকম বৈধ অনুমোদন নেই, তারপরেও মহাসমারোহে চালিয়ে যাচ্ছে প্লট বিক্রি। তবে প্লট বিক্রিতে রয়েছে ভয়ংকর প্রতারনার ফাঁদ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুধুমাত্র কোম্পানীর সাইনবোর্ড ব্যবহার করেই চলছে প্লট বিক্রি। যার ফলে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

সাধারণ ক্রেতাদের কিস্তিতে প্লট বিক্রির ফাঁদে ফেলে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিশনে মাঠে নেমেছে সরকারীভাবে অনুমোদনহীন ওয়েল কেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, রাজধানীর বারিধারা থেকে প্রায় চার কিলোমিটারের মধ্যে কাঠাপ্রতি মাত্র ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে আবাসিক এলাকায় প্লট বিক্রির নামে ভয়াবহ প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে প্লট বুকিং দিলেই স্মার্ট টিভিসহ নানা পুরস্কারের লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। অথচ, বালু নদীর ওপারে ওয়েলকেয়ার গ্রীনসিটি নামের ওই প্রকল্পের পাশেই জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে প্রতি কাঠা জমি ৫৫ থেকে ৮৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধ্যানে আরও জানা গেছে, নিজস্ব জমি না থাকায় ভাড়া করা জমির ম্যাপ দেখিয়ে জমি বিক্রি শুরু করলেও এখন পর্যন্ত ওয়েলকেয়ার গ্রুপের প্রকল্পটির নেই রাজউকের অনুমোদন বা পরিবেশ ছাড়পত্র। যার ফলে গ্রাহককে ধোঁকা দিতে ছাপানো হয়েছে আকর্ষণীয় একাধিক প্রচারপত্র। তাতে বড় করে লেখা হয়েছে রাজউক ও গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধনকৃত প্রকল্প। ব্রুশিয়রের মধ্যে ঘোলা করে ছাপানো হয়েছে রাজউক কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদের ছবি, যা কোনোভাবেই ওই প্রকল্পের নিবন্ধনের প্রমাণ নয়। ওই সনদের মধ্যে লেখা রয়েছে, ‘‘এই নিবন্ধীকরণ/তালিকাভুক্তি কোনোক্রমেই প্রকল্পের অনুমোদন বুঝায় না এবং প্রকল্পের অনুমোদন ব্যতীত প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন, পত্র-পত্রিকা, সাইনবোর্ড/বিলবোর্ড বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার প্রচারণা চালানো যাবে না। এ ধরনের বিধিবহির্ভূত কার্যক্রম গ্রহণ করলে কর্তৃপক্ষ অত্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ’’ অথচ, এই সনদের ছবি দেখিয়েই গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণায় মেতেছে ওয়েলকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু,কোম্পানীর চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা।

অনুসন্ধ্যানে আরো জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি অল্প টাকায় মাসিক কিস্তিতে প্লট বুকিং টার্গেট করে প্রায় ১০ লাখ প্লট বিক্রি করার মিশনে নেমেছে। এজন্য চলছে টিভিতে পত্রিকায় বাহারি বিজ্ঞাপণ আর রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্লট বিক্রির নামে আবাসন মেলা এবং আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়ার লোভনীয় অফার। অথচ, ওয়েলকেয়ার আবাসন কোম্পানী প্লট ব্যবসার নামে অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে চটকদার সাইনবোর্ড লাগিয়ে জনগনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হরদম চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারনা। তাদের প্রতারণার ফাঁদে পরে অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন।

কিন্তু প্রতারক এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন সময় হতে রাজধানী ঢাকা শহরের নামিদামী হোটেল ও ভিআইপি লাউঞ্জ ভাড়া নিয়ে জমকালো মেলার আয়োজন করে সহজ কিস্তিতে এ পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজারের উপরে প্লট বুকিংয়ে বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে। যার পুরো পরিকল্পনাটাই ঠকবাজি আর প্রতারনায় ভরপুর। কারন এই মুহুর্তে ওয়েলকেয়ার গ্রুপ সহজ কিস্তির মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে প্লট বুকিং দিয়ে যেই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সেই টাকা বা প্লট অদুর ভবিষ্যতে কখনোই গ্রাহক ফেরত পাবেনা বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

আর আসল ঘটনা হলো এই মুহুর্তে যারা ওয়েলকেয়ার গ্রপের নিকট জমি ভাড়া দিয়েছে সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য তাদের জমিও একদিন এই হায় হায় কোম্পানী গ্রাস করবে বলে ভোক্তভোগীরা এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে। এখন সচেতন মহলের দাবী এখনি ওয়েলকেয়ার গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ আরো প্রতারিত হবে। তাই ওয়েলকেয়ার গ্রুপের ডিজিটাল প্রতারণা থেকে সকলেই সাবধান।

সময়ের ধারা সংবাদটি শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

© All rights reserved © somoyerdhara.com
Desing by Raytahost.com